আমাদের মাঝে হয়তো অনেকেই আছি বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছি, অথচ বিন্দুমাত্র ধারণাও নেই এই
মানসিক রোগটি সম্বন্ধে। চলুন পরিচিত হওয়া যাক বাইপোলার ডিসঅর্ডার নামক এই ডিফিকাল্ট বাট
ম্যানেজেবল মেন্টাল ইলনেস টির সাথে-
আপনার মানসিক পরিস্থিতির বিপরীতধর্মী দুটো পোল নির্দেশক অবস্থাকেই বাইপোলার ডিসঅর্ডার বলে।
অফিশিয়াল সংজ্ঞা থেকে বের হয়ে একটু সহজ ভাষায় ফেরা যাক। কখনো যদি মাত্রাতিরিক্ত আনন্দ অনুভব
করে থাকেন, অথবা মাত্রাতিরিক্ত দুঃখ- যার কোনো নির্দিষ্ট কারণ আপনি জানেন না, মূলত একেই বাইপোলার
মুড ডিসঅর্ডার বলা চলে।
অনেকে রোগটিকে মুড সুইং এর সাথে গুলিয়ে ফেলতে পারেন। সেক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে, এটি কোনো
সাময়িক অবস্থা নয়, বরং একটানা এক বা দেড় সপ্তাহ বা এর বেশি সময় ধরে এ রোগের উপসর্গ গুলো আপনার
মাঝে কন্টিনিউ করলেই আপনি আশঙ্কাগ্রস্থ হতে পারেন।
উপসর্গসমূহ-
�� হঠাৎ করেই নিজের ক্ষমতা সম্বন্ধে উচ্চাকাঙ্খা পোষণ করা বা সেলফ কনফিডেন্স বেড়ে যাওয়া ;
বাস্তবিকপক্ষে আপনার দ্বারা যা সম্ভব নয়, তা পারবেন বলে ভাবা।
�� দুই বা তিন ঘন্টা ঘুমিয়ে দিনের সব কাজ স্বাভাবিকভাবে করা; শারিরীক দিক থেকে এর বেশি ঘুমের
প্রয়োজনীয়তা বোধ না করা
�� কর্মক্ষমতা বেড়ে যাওয়া; অস্বাভাবিক রকম অ্যাকটিভ হয়ে গিয়ে একটি কাজ অসমাপ্ত রেখেই অন্য
আরেকটি করতে যাওয়া
�� কথাবার্তা দ্রুত বলা; মূহূর্তের মধ্যেই এক বিষয় থেকে অন্য বিষয়ে শিফট করা
�� অপ্রয়োজনে টাকা পয়সা বেশি খরচ করা; নিজের অর্থ বা অন্যান্য ছোট বড় জিনিস অন্যকে বিলিয়ে
দেয়া কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই; ভুল জায়গায় বিনিয়োগ করা
�� যৌন আকাঙ্খা অস্বাভাবিকভাবে তীব্রতর হওয়া; অচেনা অজানা কাওকে নেতিবাচক প্রস্তাব করা।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার নির্দেশক আরো বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে । কিন্তু এবার আসি আরোগ্যপ্রাপ্তির
উপায়ে-
ওপরের সিম্পটমগুলো সাময়িক ভাবে অনুভব করলে এটি বাইপোলার ডিসঅর্ডার নয়, যেটি প্রথমেই উল্লেখ
করা হয়েছে। সব হিসেব মিলিয়ে যদি আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ এ ধরনের মানসিক অবস্থার শিকার হয়ে
থাকেন তবে প্রথম কাজটিই হচ্ছে অভিজ্ঞ সাইকিয়াট্রিস্ট এর শরণাপন্ন হওয়া। কারণ শুধু কাউন্সেলিং ব্যাপারটা খুব একটা কাজে দেয়না এই ক্ষেত্রে। আপনার আশপাশের কেউ যদি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আপনার সাথে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে, তবে তাকে বোঝানোর চেষ্টা না করে বরং সাময়িকভাবে তারকথা মেনে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ, যেহেতু তার কোনো আচরণ বা চিন্তা ই স্থায়ী হয়না।
খুব জটিল প্রকৃতির রোগ হওয়া সত্ত্বেও খুশির ব্যাপারটি হচ্ছে, প্রপার মেডিকেশন এর বদৌলতে বাইপোলার
ডিসঅর্ডার থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব। তাই বিচলিত না হয়ে নিজের যত্ন নিন এবং go for treatment.
মনে রাখবেন, আপনার ইচ্ছাশক্তিই পারে আপনাকে সুস্থ করে তুলতে।
লেখকঃ তাসমীম হোসাইন তুবা